রাত ১:০১ | মঙ্গলবার | ২৬শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ময়মনসিংহে স্বপরিবারে নিরাপত্তাহীন বাদী; তিনটি মামলা হলেও আসামিরা অধরা!

বিল্লাল হোসেন প্রান্তঃ

ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চক শ্যামরামপুরে প্রভাবশালীদের অনবরত অত্যাচারের মুখে অসহায় হয়ে পড়েছে একটি কৃষক পরিবার। সন্ত্রাসী কায়দায় জবরদখল  চালিয়ে লুটপাটসহ নষ্ট করা হয়েছে একর কে এরক জমির ফসল। থানা পুলিশে একের পর এক অভিযোগ, মামলা দায়ের করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না ভুক্তভোগী পরিবারটি। উল্টো মামলা তুলে নিতে হুমকির মুখে চরম নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছে পরিবারটি।

 

 

ভুক্তভোগী কৃষক হারুন অর রশিদের অভিযোগ সূত্রে সরজমিনে চক শ্যামরামপুরে গিয়ে দেখা যায় গ্রামটি ময়মনসিংহ সদরের মধ্যে হলেও যাতায়াত ব্যবস্থা অত্যান্ত খারাপ। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গ্রামটিতে অত্যাচারে রামজাত্ব কায়েম করে চলছে প্রতিপক্ষরা। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টা, জবরদখলসহ বিভিন্ন ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় পৃথক একাধিক মামলা ও অভিযোগ হলেও এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পেরেছে বলে জানা যায়নি। আইনশৃঙ্খলার উর্ধে এ যেন এক ভিন্ন গ্রহ। যেখানে বাদী স্বপরিবারে অনবরত অত্যাচারের শিকার।

 

 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে কৃষক হারুন অর রশিদের সেচ মটর চুরির দায়ে ধরা পড়ে একই গ্রামের উমেদ আলীর ছেলে নাজিরুল। এ ঘটনায় বিচার শালিশে ধৃত চোরকে মারধর করার দায় এনে উল্টো কৃষক হারুনের কাছ থেকে দুই দফায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। সেই থেকে একের পর এক অত্যাচারের মুখে রয়েছে কৃষক হারুনের পরিবার অভিযোগে জানা গেছে।

 

 

অভিযোগে জানা যায়, প্রতিপক্ষরা বিভিন্ন সময় তাদের বাড়ির কাছে অবস্থিত হারুন গং পরিবারের প্রায় ৭০ একর আবাদি জমির  ধান, পাট, পিয়াজ, মরিচ, টমেটো লুটপাট ও নষ্ট করে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করে আসছে। সবশেষ গত ৩ জুন দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে জোরপূর্বক প্রভাবশালী বিবাদীরা নিরিহ পরিবারটির পৃথক জমির ৩৮৪ মন ধান কেটে নষ্ট করে। একইভাবে ৬ একর জমির পাটক্ষেত গরু দিয়ে খাইয়ে নষ্ট করে এবং আড়াই একর জমির মরিচ তুলে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় অভিযোগ দেন।

 

 

এর আগে গত ২৮ মার্চ ইব্রাহিমের ছেলে মোঃ শরিফুল ইসলামকে (১৭), ১৬ এপ্রিল আনিসুর রহমানের ভাতিজা নুরুল হককে (১৮), ৬ মে হারুন অর রশিদের ভাতিজা মিজানুর রহমানকে (২৬) মারধর ও কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার দায়ে পৃথক তিনটি মামলা হয়। কোতোয়ালি থানার মামলা নং যথাক্রমে – ৩,তারিখ ৪ এপ্রিল, ৩১, তারিখ ২০ এপ্রিল, ১৭, তারিখ ৯ মে।

 

 

অভিযুক্তরা হলেন, ফজলুল হক, মোঃ আঃ করিম, আকরাম, আনারুল ইসলাম আনার, খাইরুল ইসলাম, হালিম, হাবি, কাসেম আলী, নেওয়াজ আলী, জাহের, আব্দুল সাত্তার, রাসেল, তৈয়ব আলী, শাহেদ আলী, ওহাব আলী, আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল মতিন, আব্দুল লতিফ, ইসরাফিল, উমেদ, নাসির মিয়া, নাজিরুল, নবী, মোজাম্মেল, কাউসার আলী, জুয়েল, সোহেল।

 

 

এদিকে, থানায় মামলা করায় গত ১৮ এপ্রিল কৃষক হারুনের চাচাতো ভাই কফিলের করলা ক্ষেত, চাচাতো ভাই বাদশার মরিচ ক্ষেত, ভাতিজা আব্দুল করিমের ধানক্ষেত ও পেঁয়াজ ক্ষেত কুপাইয়া ও বাইরাইয়া নষ্ট করার দায়ে উপরে উল্লেখিতদের নামে অভিযোগ দেন হারুন আর রশিদ। পরিবারটি একের পর এক অত্যাচার ও হামলার শিকার হয়েও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে পুলিশের কাছে অভিযোগ দিয়ে চলছেন।

 

 

অসহায় কৃষক হারুন-অর-রশিদ অভিযোগ করে বলেন, আমাদের সকল আবাদি ফসলি জমি প্রতিপক্ষের বাড়ির কাছে হাওয়ায় সেখানে আমরা যেতে পারছিনা। এই সুযোগে আমাদের আবাদি ৭০ একর জমির ফসল লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে ওই প্রভাবশালীরা। বর্তমানে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় পরিবার নিয়ে দিন কাটাচ্ছি। তিনি এর সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক বিচার চেয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

 

 

এ বিষয়ে কোতোয়ালী মডেল থানার নবাগত অফিস ইনর্চাজ মোঃ ফিরোজ তালুকদার বলেন, আমি আসার পর বিষয়টি কিছুটা অবগত হয়েছি। জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সেখানে অস্থিরতা চলছে। পুলিশ তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করছে। আসামিরা জামিনে আছে। তবে সম্প্রতি আরেকটি অভিযোগ পেয়েছি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আইনের উর্ধে কেউ নয়।

Print Friendly, PDF & Email

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ খবর



» ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা

» ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তারুণ্যের জয়যাত্রা

» ময়মনসিংহের বুক ফাটে মুখ ফোটেনা হতভাগা সদর-৪ শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে

» অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া মাহফিল

» অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের প্রথম নামাজে জানাজায় লাখো জনতার ঢল; প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধাঞ্জলি

» ময়মনসিংহ রাজনীতির প্রিন্সিপাল বঙ্গবন্ধুর মতিমালা আর নেই

» তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে বিএনপি সুবিধা মতো সুর পাল্টায়-বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুছ ছাত্তার

» ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে উৎখাত করতে চায় মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীরা-মোহিত উর রহমান শান্ত

» বিএনপিকে রাজপথে প্রতিহত করা হবে- আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে মোহিত উর রহমান শান্ত

» বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেহারাকে বাস্তবায়ন করতে আওয়ামী লীগ ছাড়া কোন গন্তব্য নাই-মোহিত উর রহমান শান্ত

» সেহড়ায় হোমিওপ্যাথি কলেজের জমি দখলে বাউন্ডারি দেয়াল দেয়ার অভিযোগ

» ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে আনন্দ কলরব

» বিএনপি জামায়াতকে রাজপথে মোকাবেলা করতে হবে- মোহিত উর রহমান শান্ত

» সাব-ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজির ভিডিও বার্তা

» সাত বছর পালিয়ে থাকা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী সেকেন্দার আলীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১৪

আমাদের সঙ্গী হোন

যোগাযোগ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় –

২২ সি কে ঘোষ রোড, ময়মনসিংহ
বার্তা কক্ষ : ০১৭৩৬ ৫১৪ ৮৭২
ইমেইল : dailyjonomot@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বাত্বাধিকার দৈনিক জনমত .কম

কারিগরি সহযোগিতায় BDiTZone.com

,

basic-bank

ময়মনসিংহে স্বপরিবারে নিরাপত্তাহীন বাদী; তিনটি মামলা হলেও আসামিরা অধরা!

বিল্লাল হোসেন প্রান্তঃ

ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চক শ্যামরামপুরে প্রভাবশালীদের অনবরত অত্যাচারের মুখে অসহায় হয়ে পড়েছে একটি কৃষক পরিবার। সন্ত্রাসী কায়দায় জবরদখল  চালিয়ে লুটপাটসহ নষ্ট করা হয়েছে একর কে এরক জমির ফসল। থানা পুলিশে একের পর এক অভিযোগ, মামলা দায়ের করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না ভুক্তভোগী পরিবারটি। উল্টো মামলা তুলে নিতে হুমকির মুখে চরম নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছে পরিবারটি।

 

 

ভুক্তভোগী কৃষক হারুন অর রশিদের অভিযোগ সূত্রে সরজমিনে চক শ্যামরামপুরে গিয়ে দেখা যায় গ্রামটি ময়মনসিংহ সদরের মধ্যে হলেও যাতায়াত ব্যবস্থা অত্যান্ত খারাপ। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গ্রামটিতে অত্যাচারে রামজাত্ব কায়েম করে চলছে প্রতিপক্ষরা। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টা, জবরদখলসহ বিভিন্ন ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় পৃথক একাধিক মামলা ও অভিযোগ হলেও এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পেরেছে বলে জানা যায়নি। আইনশৃঙ্খলার উর্ধে এ যেন এক ভিন্ন গ্রহ। যেখানে বাদী স্বপরিবারে অনবরত অত্যাচারের শিকার।

 

 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে কৃষক হারুন অর রশিদের সেচ মটর চুরির দায়ে ধরা পড়ে একই গ্রামের উমেদ আলীর ছেলে নাজিরুল। এ ঘটনায় বিচার শালিশে ধৃত চোরকে মারধর করার দায় এনে উল্টো কৃষক হারুনের কাছ থেকে দুই দফায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। সেই থেকে একের পর এক অত্যাচারের মুখে রয়েছে কৃষক হারুনের পরিবার অভিযোগে জানা গেছে।

 

 

অভিযোগে জানা যায়, প্রতিপক্ষরা বিভিন্ন সময় তাদের বাড়ির কাছে অবস্থিত হারুন গং পরিবারের প্রায় ৭০ একর আবাদি জমির  ধান, পাট, পিয়াজ, মরিচ, টমেটো লুটপাট ও নষ্ট করে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করে আসছে। সবশেষ গত ৩ জুন দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে জোরপূর্বক প্রভাবশালী বিবাদীরা নিরিহ পরিবারটির পৃথক জমির ৩৮৪ মন ধান কেটে নষ্ট করে। একইভাবে ৬ একর জমির পাটক্ষেত গরু দিয়ে খাইয়ে নষ্ট করে এবং আড়াই একর জমির মরিচ তুলে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় অভিযোগ দেন।

 

 

এর আগে গত ২৮ মার্চ ইব্রাহিমের ছেলে মোঃ শরিফুল ইসলামকে (১৭), ১৬ এপ্রিল আনিসুর রহমানের ভাতিজা নুরুল হককে (১৮), ৬ মে হারুন অর রশিদের ভাতিজা মিজানুর রহমানকে (২৬) মারধর ও কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার দায়ে পৃথক তিনটি মামলা হয়। কোতোয়ালি থানার মামলা নং যথাক্রমে – ৩,তারিখ ৪ এপ্রিল, ৩১, তারিখ ২০ এপ্রিল, ১৭, তারিখ ৯ মে।

 

 

অভিযুক্তরা হলেন, ফজলুল হক, মোঃ আঃ করিম, আকরাম, আনারুল ইসলাম আনার, খাইরুল ইসলাম, হালিম, হাবি, কাসেম আলী, নেওয়াজ আলী, জাহের, আব্দুল সাত্তার, রাসেল, তৈয়ব আলী, শাহেদ আলী, ওহাব আলী, আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল মতিন, আব্দুল লতিফ, ইসরাফিল, উমেদ, নাসির মিয়া, নাজিরুল, নবী, মোজাম্মেল, কাউসার আলী, জুয়েল, সোহেল।

 

 

এদিকে, থানায় মামলা করায় গত ১৮ এপ্রিল কৃষক হারুনের চাচাতো ভাই কফিলের করলা ক্ষেত, চাচাতো ভাই বাদশার মরিচ ক্ষেত, ভাতিজা আব্দুল করিমের ধানক্ষেত ও পেঁয়াজ ক্ষেত কুপাইয়া ও বাইরাইয়া নষ্ট করার দায়ে উপরে উল্লেখিতদের নামে অভিযোগ দেন হারুন আর রশিদ। পরিবারটি একের পর এক অত্যাচার ও হামলার শিকার হয়েও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে পুলিশের কাছে অভিযোগ দিয়ে চলছেন।

 

 

অসহায় কৃষক হারুন-অর-রশিদ অভিযোগ করে বলেন, আমাদের সকল আবাদি ফসলি জমি প্রতিপক্ষের বাড়ির কাছে হাওয়ায় সেখানে আমরা যেতে পারছিনা। এই সুযোগে আমাদের আবাদি ৭০ একর জমির ফসল লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে ওই প্রভাবশালীরা। বর্তমানে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় পরিবার নিয়ে দিন কাটাচ্ছি। তিনি এর সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক বিচার চেয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

 

 

এ বিষয়ে কোতোয়ালী মডেল থানার নবাগত অফিস ইনর্চাজ মোঃ ফিরোজ তালুকদার বলেন, আমি আসার পর বিষয়টি কিছুটা অবগত হয়েছি। জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সেখানে অস্থিরতা চলছে। পুলিশ তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করছে। আসামিরা জামিনে আছে। তবে সম্প্রতি আরেকটি অভিযোগ পেয়েছি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আইনের উর্ধে কেউ নয়।

Print Friendly, PDF & Email

সর্বশেষ খবর



এ বিভাগের অন্যান্য খবর



আমাদের সঙ্গী হোন

যোগাযোগ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় –

২২ সি কে ঘোষ রোড, ময়মনসিংহ
বার্তা কক্ষ : ০১৭৩৬ ৫১৪ ৮৭২
ইমেইল : dailyjonomot@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বাত্বাধিকার দৈনিক জনমত .কম

কারিগরি সহযোগিতায় BDiTZone.com