বিল্লাল হোসেন প্রান্তঃ
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে সরকারের ‘খ’ তফসিলভুক্ত সম্পত্তির শত শত ট্রাক বালু ও মাটি কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে স্থানীয় বাপ্পী নামের এক প্রভাবশালী। এনিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে ক্ষোভ-অসন্তোষ সৃষ্টি হলেও প্রভাবশালীদের ভয়ে মুখ খুলছে না কেউ।
ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হলেও সরকারি সম্পদ রক্ষায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ধরনের ব্যবস্থা নেই বলে দাবি করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
প্রভাবশালী বাপ্পী উপজেলার ৯নং ভাংনামারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সার্জেন্ট (অব:) মো: নূরুল ইসলাম আকন্দের ছেলে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভাংনামারী ইউনিয়নের বয়ড়া বাজার সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী সম্পত্তিটি সরকারের ‘খ’ তফসিলভুক্ত। বর্তমানে ওই সম্পত্তিটি স্থানীয় বালু সন্ত্রাসীদের অভায়রণ্যে পরিনত হয়েছে। বিগত ৬ মাস ধরে এই সরকারি সম্পত্তি থেকে দিনে-রাতে শত শত ট্রাক বালু ভেক্যু দিয়ে কেটে নিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই বালু সিন্ডিকেট।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বাসিন্দার অভিযোগ, মাটি কেটে নেওয়ার কারণে ফসলি জমি বিনষ্ট হচ্ছে। সেই সাথে প্রতিদিন শত শত বালু ভর্তি ট্রাক আসা-যাওয়ার কারণে গ্রামীণ সড়কগুলো ধসে পড়ছে। কিন্তু এলাকাবাসী ঝগড়া-বিবাধের ভয়ে কেউ কোন কথা বলছে না।
গত কয়েকদিন আগে অভিযোগের সত্যতা জানাতে ঘটনাস্থল এলাকায় গেলে দেখা যায় সরকারি সম্পত্তি হরিলুটের চিত্র। বালু ও মাটি কেটে নেওয়ার কারণে ওই জমি গুলো এখন বড় বড় পুকুরে পরিণত হয়েছে। এতে সরকারি সম্পদের ক্ষীত হলেও লাভবান হচ্ছে বালু সিন্ডিকেট।
এ সময় বালু-মাটি কাটা অবস্থায় দেখা হয় টাঙ্গাইল থেকে আসা ভেকু চালক রমজান আলীর সাথে। তিনি জানান, আমি ভাড়ায় কাজ করি। সদর উপজেলার সাহেব কাচারী এলাকার ভেকু মালিক দেলোয়ার আমাকে এখানে কাজে এনেছেন।
পরে দেলোয়ারের সাথে দেখা হলে তিনি জানান, স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতার ছেলে বাপ্পী মাটি কাটার জন্য তার ভেকু ভাড়া করেছে।
স্থানীয়রা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরও জানান, প্রতিদিন বিকেল থেকে বালুবাহী ট্রাকের আসা-যাওয়া শুরু হয়। চলে শেষ রাত পর্যন্ত। এতে প্রতি রাতে প্রায় শতাধিক ট্রাক বালু কেটে নেওয়া হয়।
খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান মো: মোফাজ্জল হোসেন খান। তিনি বলেন, বালু লুটের খবর পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে বলব। তিনি আরও বলেন, শুনেছি দলের নাম ভাঙ্গিয়ে একটি চক্র এসব করছে। এতে দলের সুনাম ক্ষুন্ন হলেও তারা আর্থিক ভাবে লাভবান। বিষয়টি দুঃখজনক।
সোমবার (২৮ মার্চ) দুপুরে এবিষয়ে জানতে কথা হয় প্রভাবশালী বাপ্পীর মুঠোফোনে। তবে সাংবাদিক পরিচয়ে তিনি মোবাইলের সংযোগ কেটে দেন।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান মারুফ বলেন, ব্যক্তি পর্যায় থেকে এ ধরনের লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি। তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।