বিল্লাল হোসেন প্রান্তঃ
চাঁদা না দেয়ায় ময়মনসিংহ সরকারী আনন্দমোহন কলেজের হোস্টেলে ঢুকে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা বাংলা বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী নাঈমুর রহমানকে ব্যাপক মারধর করে গুরুতর আহত করেছে। আহত শিক্ষার্থী নাঈমুর মচিমহায় ভর্তি রয়েছেন।
শুক্রবার ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুর আড়াইটার দিকে ৮ থেকে ১০ সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে নাঈমুরকে পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দেয় এবং মাথায় ও শরীরে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে।
আহত শিক্ষার্থীর অভিযোগ, বৃহস্পতিবার ২১ ফেব্রুয়ারি তার ভাগিনা ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী সোহেলকে আটকে ১৫ শ টাকা ছিনিয়ে নেয় তাকিব হাসান শাহীন, শহিদ, ইমন, তাপস, আকাশসহ বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী। পরদিন আবার কলেজ হোস্টেলে এসে আরও ৮শ টাকা চাঁদা দাবি করে। মাদকের জন্য চাঁদার টাকা না দেয়ায় ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে বাধা দেয়ায় সোহেলের মামা ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী নাঈমুরকে কুপিয়ে আহত করে বহিরাগত ওই সন্ত্রাসীরা। এক্ষেত্রে হল সভাপতি প্রিয় মন্ডল এর দিকে সন্ত্রাসীদেও উসকে দেয়ার অভিযোগ তুলেছে আহত নাঈমুর।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ চিকিৎসাধীন নাঈমুরের শয্যপার্শ্বে উপস্থিত এএম কলেজের একাধিক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মোঃ রকিবুল ইসলাম রকিব এর “ভাতিজা” তাকিব হাসান শাহীন। ওই শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, তাকিব কলেজ ক্যাম্পাসে প্রতিনিয়তই বহিরাগতদের নিয়ে বিভিন্ন হলে মাদক সেবন ও ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে। অভিযোগ সূত্র দাবি করে তাকিবের চাচা জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি বিধায় কেউ তাদের বাধা দেয়ার সাহস পায়না।
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মোঃ রকিবুল ইসলাম রকিব এই প্রতিনিধির প্রশ্নের উত্তরে জানান, ক্যাম্পাসে হামলাকারী যেই হোক আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা অভিযোগ করছে তারাও আমার লোক। তিনি অস্বীকার করে বলেন, তাকিব আমার রক্তের ভাতিজা না। কোন অন্যায়কারী আমার কেউ না। আমাকে হেয় করার জন্যই এসব অভিযোগ।
এদিকে, শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করে বলেন, আজ ২৩ ফেব্রুয়ারি শনিবার আনন্দমোহন কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা নাঈমুরের উপর ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে ও সন্ত্রাসীদের বিচার দাবি করে মানববন্ধন করেছে। জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও তার অনুসারীরা এতে অংশগ্রহন করেন। তবে মানববন্ধনে সাধারণ শিক্ষার্থীদেও সংখ্যাই বেশি উপরন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা জানান, হামলাকারীরা ছাত্রলীগ নেতার ছত্রছায়ার লোক। ফলে মাদক,চাঁদার জন্য হামলা করে শিক্ষার্থীকে আহত করার পর এর বিরুদ্ধে করা মানববন্ধনে উক্ত ছাত্রনেতাদের উপস্থিতি আইওয়াশ মাত্র। এ নাটকিয়তার ফলে বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত হবার আংশকা থেকেই যায় মন্তব্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
এ বিষয়ে শনিবার বিকালে হাসপাতালে উপস্থিত কলেজ হোস্টেল সুপার আনোয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কলেজ প্রশাসন থেকে পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে তারা ব্যবস্থা নিবেন। এ বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে পারবো না। যা বলার বলবেন কলেজের প্রিন্সিপাল।
এ বিষয়ে কোতোয়ালী মডেল থানায় আহত নাঈমুরের মামা বাদী হয়ে অভিযোগ দেয়ায় বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন আহতর পরিবার।