বিল্লাল হোসেন প্রান্তঃ

ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্যদিয়ে ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা সম্পন্ন হয়েছে। সাংগঠনিক এ সভায় তিনটি বিষয়কে বাস্তবায়নে তিন মাসের সময় বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। আগামী তিন মাসের মধ্যে ওয়ার্ড কমিটি সম্পন্ন করা, এ লক্ষে তিনটি সাংগঠনিক টিম করা ও নতুন সদস্য সংগ্রহে কেন্দ্রীয় ফরম ব্যবহার করা।

শুক্রবার ২৪ সেপ্টেম্বর নগরীর জোবেদা কমিউনিটি সেন্টারে ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অগ্নিকন্যা বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি। সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন ময়মনসিংহ বিভাগের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি।
ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম এর সভাপতিত্বে  ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্তর সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বাবু অসীম কুমার উকিল, কার্যনির্বাহী সদস্য মারুফা আক্তার পপি ও উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগ জনগনের কল্যানে কাজ করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের হাতে গড়া সংগঠন আওয়ামী লীগকে কাজে লাগিয়ে দেশকে আজ দুর্বার গতিতে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ৯৬ তে বঙ্গবন্ধু কন্যা মোবাইল ও ইন্টারনেট আনলেন, কিন্তু বিএনপির জন্য সেসময় তা করতে পারলেন না। আজ দেখুন বেগম জিয়ার ছেলে তা ব্যবহার করছে অপকর্মে। আর সরকার বাচ্চাদের শিক্ষার জন্য ব্যবহার করছে। করোনাকালীন ঘাটতি পূরণে এই নেট কাজ করছে। সারা পৃথিবীর সাথে তাল মিলিয়ে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে আজ বাংলাদেশ।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, বিশ্বের মানুষ আজ দেখেছে কি করে পদ্মা সেতু হচ্ছে বাংলাদেশে, বিশ্বব্যাংকের অহেতুক খবরদারিকে তোয়াক্কা না করে। হাড় মানবেনা বাংলাদেশ এটাই আমাদের শ্লোগান।

করোনাকালে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মানবিক কাজ করার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ দীপু মনি বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষের কল্যানে রাজনীতি করে,বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করে। জাতির পিতা আমাদের এগুলো শিখিয়ে দিয়ে গেছেন। তার আদর্শের সাথেই আছে জনকল্যান, দেশের সমৃদ্ধি।

তিনি বলেন, সুসময়ের সুখের পাখি, শীতের পাখি তারা দুঃসময়ে থাকবেনা। থাকবে ত্যাগী নিবেদিতরা। তারা কাউকে ধাক্কা দিয়ে আসেনা। আর ত্যাগীরা একটু অভিমানী হয়। তারা অসম্মানকে এড়িয়ে চলে। তাই ত্যাগীদের একটি সম্মান দিয়েন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ান দল-বিএনপি শুধুমাত্র মিডিয়ার সামনে সারাদিন নিজেদের চেহারা দেখায়, মিথ্যাচার করে। তাদেরকে রাজনীতি কে শিখাবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বার বার সংগ্রামের মাধ্যমে গণতন্ত্র সমুন্নত রেখেছে। জনগণের কল্যানে।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান রাজনৈতিক সংগঠন কেমন হবে তা বলে গেছেন। নেতৃত্ব ‘আদর্শ ও সংগঠন। আমাদের নেতৃত্ব আছে, আদর্শ আছে, সংগঠন আছে। তিনি সংগঠনকে শক্তিশালী করতে জনমুখি কাজ করার তাগিদ দিয়ে বলেন, কর্মসূচী কেন্দ্রীক কাজ করলেই হবে না। জনকল্যানমুখি কাজ করতে হবে। নিয়মিত সভা,ওর্য়াড কমিটি করতে হবে, সদস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে দলের ফরম ব্যাবহার করতে হবে।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার অগ্রযাত্রার সাথে দলকে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। আমরা যেন উনাকে টেনে না ধরি। উনার অগ্রযাত্রার সাথে এগিয়ে যেতে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। এজন্য আমাদের আরও গতি বাড়াতে হবে। আমরা অনেক গর্ববোধ করি আমাদের নেতৃত্ব নিয়ে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব নিয়ে দেশে বিদেশে কোথাও যৌক্তিক বিবেকবান মানুষ প্রশ্ন তুলতে পারে না।

সুসংগঠিত সংগঠন করার উপর জোর দিয়ে সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এক। জাতির পিতা আমাদের একটি সুখি সমৃদ্ধ দেশ দিয়েছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা দিচ্ছেন তারই লক্ষ্যে উন্নয়ন। সে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা মহানগর আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে চাই। আপনারাই নেতা নির্বাচন করবেন। আপনারাই ওয়ার্ড কমিটি করবেন। আমরা শুধু আপনাদের সহায়তা করতে এসেছি, আর কিছু নয়। আমরা সবাই মিলে সঠিক কাজটি করতে পারলেই আওয়ামী লীগ সফল হবে।

সাংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক বাবু অসিম কুমার উকিল বলেন, আমাদের আদর্শ হলো বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, আমাদের চেতনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, দেশ উন্নয়নে শেখ হাসিনার নির্দশনাকে বাস্তবায়ন করে আমরা এগিয়ে যাবো, এই হলো আমাদের উদ্দেশ্য। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে সুশৃঙ্খল সংগঠন এর বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং বলেন, ময়মনসিংহ আওয়ামী লীগ মানে জননেত্রী শেখ হাসিনার দুর্গ। মহানগর আওয়ামী লীগকে সংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে সভা করার প্রতি জোর দিয়ে তিনি বলেন, সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম চালু রাখতে কেন্দ্রীয় ফরম ব্যবহার করতে হবে।

এহতেশামুল আলম বলেন, সংগঠনকে এগিয়ে নিতে আমি বিন্দুমাত্রা ফাকি দেইনি। দলকে শৃঙ্খলিত করতে আমি সবসময় মাঠে ছিলাম। আমরা একদিনে ২১ টি ওয়ার্ডে মিটিং করেছি। জোড়দিয়ে বলতে পারি ময়মনসিংহে মহানগর আওয়ামী লীগ অত্যন্ত শক্তিশালী।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকলীগ সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড, জহিরুল ইসলাম খোকা, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অধ্যাপক গোলাম ফেরদৌস জিল্লু, মেয়র ইকরামুল হক টিটু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হোসাইন জাহাঙ্গীর বাবুসহ ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।