রাত ৮:৪৭ | বৃহস্পতিবার | ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

তৌহিদ হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন; নেপথ্যে তুচ্ছ ঘটনা; এসপির আক্ষেপ

বিল্লাল হোসেন প্রান্তঃ

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তৌহিদুল ইসলাম হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ। তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বাকবিতন্ডা,পরে মোবাইল চুরির উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকান্ড। ঘাতক মোঃ আশিকুজ্জামান আশিকের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান।

 

 

চাঞ্চল্যকর তৌহিদ হত্যাকান্ডের ৪৮ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও কোন ক্লুই যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উদ্ধার করতে পারছিলোনা। ঠিক তখন তৌহিদের রেখে যাওয়া ছোট্ট একটি মোবাইল বার্তার সূত্র ধরেই খুনিকে সনাক্ত করলো জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

৪ মে সোমবার বিকাল ৩ টায় পুলিশ মিডিয়া সেন্টারে হত্যাকান্ডের বিষয় নিয়ে প্রেসব্রিফিং করেন পুলিশ সুপার মোহাঃ আহমার উজ্জামান।

এসপি হত্যাকান্ডের কারণ জানিয়ে মর্মাহতভাবে আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, হত্যাকারীর মোটিভ বুঝতে পেরেছিলেন তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থী তৌহিদ। কিন্তু সে পুলিশকে বিষয়টি জানায়নি। যদি সে বিষয়টি পুলিশকে একটিবার জানাতেন, হয়তো আজকে এমন একটি তারুণ্যউজ্জল তাজা প্রাণ আমরা হারাতাম না।

 

 

হত্যাকান্ডের নেপথ্য ঘটনাঃ
হত্যাকান্ডের ২ দিন আগে তৌহিদের সাথে আশিকের বাকবিতন্ডা হয়। তৌহিদের গলিপথে রমজান মাসের গাম্ভীর্য্য নষ্ট করে
সিগারেট খাচ্ছিলো আশিক। এতে বাধাগ্রস্থ করে তৌহিদ। এসময় তৌহিদের হাতে থাকা সাওমি স্মার্ট মোবাইল ফোনটি দেখে নেয়ার লোভ হয় আশিকের। সে তৌহিদের পিছনে পিছনে বাসায় গিয়ে তার রুম দেখে আসে।  ঘটনার দিন ১মে রাত অনুমান তিন ঘটিকায় বাসার ছাদ দিয়ে মোবাইল চুরি করতে আসে আশিক। এসময় তৌহিদ তাকে ধরে ফেলে। উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে পাশে থাকা রড দিয়ে তৌহিদকে আঘাত করে রক্তাক্ত করে পালিয়ে যায় আশিক। মমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেদিনই সে মারা যায়।

 

 

হত্যাকান্ডের পুরো ঘটনা তুলে ধরে এসপি বলেন, হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রডটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে একটি বিষয় আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে নাগরিকদের বলতে চাই। হত্যাকান্ডটিতে দুটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ যার জন্য খুনি সহজে কাজটি করতে পেরেছে। ১, হত্যাকারী ছাদ দিয়ে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করতে পেড়েছিলো একমাত্র ছাদের দরজাটি পুরোনো,ভাঙ্গা ও নষ্ট মরিচাধরা তালা থাকার কারণে। ২, তৌহিদ হত্যাকারীর মোটিভ বুঝতে পেরেও পুলিশকে কিছুই বলেনি বা জানায়নি।

 

 

এসপি বলেন, দয়া করে সম্মানিত নাগরিকরা এ কাজটি করবেন না। আপনি কোন প্রকার থ্রেডের সম্মুক্ষিন হলে তা পুলিশকে জানান। একটি জিডি করেন। আর নিজের বাড়ি অরক্ষিত রেখে দুষ্কৃতকারীদের সুযোগ যেন না করে দেই।

 

 

নিহত তৌহিদুল ইসলাম খান (২৫) পিতা মোঃ সাইকুল ইসলাম,সাং-রামেশ্বরপুর, থানা-আটপাড়া। সে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

 

 

হত্যাকারী,মোঃ আশিকুজ্জামান আশিক (২৭), পিতা মৃত-সোহেল মিয়া, মাতা-মোছাঃ আনোয়ারা বেগম আনু, সাং- বাসা নং-১৯২, গোহাইলককান্দি(জামতলামোড়)। সে একজন এলাকার পেশাদার চোর ও মাদক সেবী।

 

 

উল্লেখ্য, গত ১ মে ময়মনসিংহ শহরের তিনকোনা পুকুরপাড় এলাকার জনৈক সোলায়মানপর বাসার ভাড়াটিয়া জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম  বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তৌহিদুল ইসলামকে রড দিয়ে আঘাত করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়।

Print Friendly, PDF & Email

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ খবর



» আগামীকাল ময়মনসিংহ মেতে উঠবে স্বাধীনতা কনসার্টে

» ভাষা শহীদদের প্রতি সংসদ সদস্য মোহিত উর রহমান শান্তর শ্রদ্ধাঞ্জলী

» ১৪৭ বেকার তরুণ তরুণীকে চাকুরির প্রস্তুতি কর্মশালা করালেন এমপি মোহিত উর রহমান শান্ত

» হালুয়াঘাট-ধোবাউড়ায় ৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ বৃদ্ধি ; কৃষি সেচে গুরুত্ব এমপির

» ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আলোচনায় আবু সাঈদ

» সংবর্ধনা বাতিল করে শীতার্তদের মাঝে এমপি মোহিত উর রহমানের কম্বল বিতরণ

» ব্রহ্মপুত্রে নৌকায় চড়ে অনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করলেন মোহিত উর রহমান শান্ত

» ময়মনসিংহে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে উল্লাসভরে ফুলেল শুভেচ্ছায় সমাবেশ

» লেঃ কর্ণেল (অবঃ)নজরুল ইসলামের হস্তক্ষেপে দীর্ঘদিনের জমি সংক্রান্ত বিরোধের অবসান

» ময়মনসিংহ-৪ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মোহিত উর রহমান শান্ত

» আবারও জাপাকে দিলে জনগনের আস্থা হারাবে আওয়ামী লীগ

» ময়মনসিংহ-৪ আসনে মনোনয়ন কিনেছেন মহানগর সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত

» জনসভায় জনসমুদ্র ; সদরের প্রত্যাশা মোহিত উর রহমান শান্ত

» সংবিধান মেনে নির্বাচনে আসেন, আমরাও আসবো-বিএনপিকে মোহিত উর রহমান শান্ত

» প্রতীকী অটোরিকশা চালিয়ে অবরোধের বিরুদ্ধে মোহিত উর রহমান শান্তর প্রতিবাদ

আমাদের সঙ্গী হোন

যোগাযোগ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় –

২২ সি কে ঘোষ রোড, ময়মনসিংহ
বার্তা কক্ষ : ০১৭৩৬ ৫১৪ ৮৭২
ইমেইল : dailyjonomot@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বাত্বাধিকার দৈনিক জনমত .কম

কারিগরি সহযোগিতায় BDiTZone.com

,

basic-bank

তৌহিদ হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন; নেপথ্যে তুচ্ছ ঘটনা; এসপির আক্ষেপ

বিল্লাল হোসেন প্রান্তঃ

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তৌহিদুল ইসলাম হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ। তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বাকবিতন্ডা,পরে মোবাইল চুরির উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকান্ড। ঘাতক মোঃ আশিকুজ্জামান আশিকের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান।

 

 

চাঞ্চল্যকর তৌহিদ হত্যাকান্ডের ৪৮ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও কোন ক্লুই যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উদ্ধার করতে পারছিলোনা। ঠিক তখন তৌহিদের রেখে যাওয়া ছোট্ট একটি মোবাইল বার্তার সূত্র ধরেই খুনিকে সনাক্ত করলো জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

৪ মে সোমবার বিকাল ৩ টায় পুলিশ মিডিয়া সেন্টারে হত্যাকান্ডের বিষয় নিয়ে প্রেসব্রিফিং করেন পুলিশ সুপার মোহাঃ আহমার উজ্জামান।

এসপি হত্যাকান্ডের কারণ জানিয়ে মর্মাহতভাবে আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, হত্যাকারীর মোটিভ বুঝতে পেরেছিলেন তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থী তৌহিদ। কিন্তু সে পুলিশকে বিষয়টি জানায়নি। যদি সে বিষয়টি পুলিশকে একটিবার জানাতেন, হয়তো আজকে এমন একটি তারুণ্যউজ্জল তাজা প্রাণ আমরা হারাতাম না।

 

 

হত্যাকান্ডের নেপথ্য ঘটনাঃ
হত্যাকান্ডের ২ দিন আগে তৌহিদের সাথে আশিকের বাকবিতন্ডা হয়। তৌহিদের গলিপথে রমজান মাসের গাম্ভীর্য্য নষ্ট করে
সিগারেট খাচ্ছিলো আশিক। এতে বাধাগ্রস্থ করে তৌহিদ। এসময় তৌহিদের হাতে থাকা সাওমি স্মার্ট মোবাইল ফোনটি দেখে নেয়ার লোভ হয় আশিকের। সে তৌহিদের পিছনে পিছনে বাসায় গিয়ে তার রুম দেখে আসে।  ঘটনার দিন ১মে রাত অনুমান তিন ঘটিকায় বাসার ছাদ দিয়ে মোবাইল চুরি করতে আসে আশিক। এসময় তৌহিদ তাকে ধরে ফেলে। উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে পাশে থাকা রড দিয়ে তৌহিদকে আঘাত করে রক্তাক্ত করে পালিয়ে যায় আশিক। মমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেদিনই সে মারা যায়।

 

 

হত্যাকান্ডের পুরো ঘটনা তুলে ধরে এসপি বলেন, হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রডটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে একটি বিষয় আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে নাগরিকদের বলতে চাই। হত্যাকান্ডটিতে দুটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ যার জন্য খুনি সহজে কাজটি করতে পেরেছে। ১, হত্যাকারী ছাদ দিয়ে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করতে পেড়েছিলো একমাত্র ছাদের দরজাটি পুরোনো,ভাঙ্গা ও নষ্ট মরিচাধরা তালা থাকার কারণে। ২, তৌহিদ হত্যাকারীর মোটিভ বুঝতে পেরেও পুলিশকে কিছুই বলেনি বা জানায়নি।

 

 

এসপি বলেন, দয়া করে সম্মানিত নাগরিকরা এ কাজটি করবেন না। আপনি কোন প্রকার থ্রেডের সম্মুক্ষিন হলে তা পুলিশকে জানান। একটি জিডি করেন। আর নিজের বাড়ি অরক্ষিত রেখে দুষ্কৃতকারীদের সুযোগ যেন না করে দেই।

 

 

নিহত তৌহিদুল ইসলাম খান (২৫) পিতা মোঃ সাইকুল ইসলাম,সাং-রামেশ্বরপুর, থানা-আটপাড়া। সে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

 

 

হত্যাকারী,মোঃ আশিকুজ্জামান আশিক (২৭), পিতা মৃত-সোহেল মিয়া, মাতা-মোছাঃ আনোয়ারা বেগম আনু, সাং- বাসা নং-১৯২, গোহাইলককান্দি(জামতলামোড়)। সে একজন এলাকার পেশাদার চোর ও মাদক সেবী।

 

 

উল্লেখ্য, গত ১ মে ময়মনসিংহ শহরের তিনকোনা পুকুরপাড় এলাকার জনৈক সোলায়মানপর বাসার ভাড়াটিয়া জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম  বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তৌহিদুল ইসলামকে রড দিয়ে আঘাত করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়।

Print Friendly, PDF & Email

সর্বশেষ খবর



এ বিভাগের অন্যান্য খবর



আমাদের সঙ্গী হোন

যোগাযোগ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় –

২২ সি কে ঘোষ রোড, ময়মনসিংহ
বার্তা কক্ষ : ০১৭৩৬ ৫১৪ ৮৭২
ইমেইল : dailyjonomot@gmail.com

© সর্বস্বত্ব স্বাত্বাধিকার দৈনিক জনমত .কম

কারিগরি সহযোগিতায় BDiTZone.com