বিল্লাল হোসেন প্রান্তঃ
বছর ঘুরে আবারো প্রকোপ হয়ে আঘাত হানছে বিশ্ব মহামারি করোনা ভাইরাস। চলমান এ প্রাদুর্ভাবে জনজীবন নানা সংকটে পড়ে দিশেহারা। বিশেষ করে নিন্ম ও নিন্ম মধ্যবিত্ত শ্রেনীর মানুষগুলো পরিবার নিয়ে সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়ছে। দৈনিক উপার্জন করে সংসার চালানো মানুষগুলো লকডাউনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এসব মানুষের কথা চিন্তা করে সরকার বিভিন্ন সহায়তা কার্যক্রম চালু রেখেছেন ধাপে ধাপে। খাদ্য সামগ্রী, অর্থ সহায়তা, জরুরী সহায়তা কার্যক্রম চলছে বিভিন্ন মাধ্যমে। সারা দেশের মতো ময়মনসিংহেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তা উপহার পৌছে যাচ্ছে হাতে হাতে, ঘরে ঘরে।
করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ধাপের সংক্রমন প্রতিরোধে সরকার চলতি মাসের ১৪ তারিখ দেশে লকডাউন ঘোষনা করে। এদিন থেকে শুরু হয় মাহে রমজান। লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্থ অসহায়, দুস্থ, নিন্ম আয়ের জনগোষ্ঠীর কথা মাথায় রেখে প্রধানমন্ত্রী সহায়তা কার্যক্রম চালু করেছেন। যা ময়মনসিংহে সুষ্ঠু বন্টন করছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। তিনি কর্মহীন দুস্থ অসহায়দের তালিকা প্রনয়ন করে তাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন চাল, ডাল, তেল, লবণ, আলু, পেয়াজ ও ঈদের জন্য সেমাই।
প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উপহার খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমে জেলা প্রশাসকের সাথে থাকছেন জেলা পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ। সহায়তা কার্যক্রমের আওতায় গত তিন দিনে প্রায় ৮৬৮ জনকে দেয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার খাদ্য সামগ্রী। এর মাঝে ২৮ এপ্রিল ২৫০ দুস্থ অসহায় কর্মহীন জনগোষ্ঠীর মাঝে বিতরণ করা হয় খাদ্য সামগ্রী। একইভাবে ২৬ এপ্রিল ২৬০ জন হিজরাকে দেয়া হয় সহায়তা সামগ্রী, ২৫ এপ্রিল ৩৫৮ জন যৌনকর্মীর মাঝে বিতরণ করা হয় এসব সহায়তা উপহার।
সমাজের পিছিয়ে পরা মানুষের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী যে সহায়তা কার্যক্রম চালু করেছেন তা প্রাপ্যদের হাতে সুষ্ঠুভাবে পৌছে দেয়ায় জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সচেতন মহল। করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের প্রথম দিকে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পাশে ছিলেন সমাজের বিত্তবান, সমাজসেবক, রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গরা। তবে এবার দ্বিতীয় ধাপের সংকটে তাদের তেমন সাড়া না থাকলেও সরকার পর্যায়ক্রমিক সহায়তা কার্যক্রম চালু রেখেছেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক জানান, প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা অনুদান হিসাবে ময়মনসিংহে ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। এর মাঝে প্রতি উপজেলায় এক লাখ করে ১৩ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে। ময়মনসিংহ সদরে পর্যাক্রমিকভাবে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
ডিসি জানান, আগামী সোমবার নাগাদ আরও ৮শ জনকে এসব খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হবে। এছাড়া ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রনালয় থেকে ময়মনসিংহ জেলার জন্য ১২ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে। যা জেলা প্রশাসন ৩৩৩ জরুরী সেবা কার্যক্রমে দিচ্ছেন। এছাড়া জেলার গরীব অসহায় পরিবারে শিশুদের শিশু খাদ্যের জন্য ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। যা জেলা প্রশাসন সিটি করপোরেশনকে হস্তান্তর করেছেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক ডেইলি জনমতকে আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে আমরা সরকারের সকল সুবিধা যথাস্থানে প্রাপ্যদের মাঝে বন্টন করার চেষ্টা করছি। এজন্য বিতরণের পূর্বেই খোঁজখবর নিয়ে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে তালিকা প্রনয়ন পূর্বক স্বচ্ছতার সাথে প্রদান করছি। এ কার্যক্রম দুর্যোগকালীন সময়ে চলমান থাকবে বলেও তিনি জানান।