বিল্লাল হোসেন প্রান্তঃ
বিশেষ ওএমএস খাদ্যকার্ডের আওতায় প্রনীত তালিকায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত কারাবন্দীর নাম ওঠানোর ঘটনায় ময়মনসিংহে ব্যাপক সমালোচনা ঝড় উঠেছে। ১৬ নং ওয়ার্ডের প্রকাশিত তালিকার ৪৯৬ নাম্বার ক্রমিকের মিঠুন চন্দ্র সাহা মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত কারাবন্দী। সে বর্তমানে জেলখানায় থাকলেও তার নাম তালিকায় রয়েছে বলে জানা গেছে।
সিটি করপোরেশন এলাকার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে কাউন্সিরলদের দেয়া প্রকাশিত চূড়ান্ত তালিকায় এমন ত্রুটি নিয়ে চলছে সমালোচনা। মন্তব্য চলছে স্বজনপ্রীতি, নিজস্ব ভোটার বলয়, একই পরিবারের একাধিক ব্যাক্তিদের রাখা হয়েছে তালিকায়। বাদ পড়েছে অনেক অসহায় পরিবার।
এবিষয়ে ১৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মান্নান বলেন, তালিকা প্রনয়ন আমার মাধ্যমে হলেও ওয়ার্ডের বিশেষ ব্যাক্তিরাও নাম প্রদান করেছেন। আমার ওয়ার্ডে ৬শ কার্ডের মধ্যে আমি পেয়েছি ৪শ,রাজনীতিক ও সমাজসেবকরা দিয়েছেন ২শ। এটি সিটি করপোরেশন থেকে বন্টন করে দিয়েছে। তবে এ সুবিধার আওতায় পড়েন না বা একই পরিবারের একাধিক ব্যাক্তি কার্ড পেলেও তারা চাল পাবেনা বলেও তিনি জানান।
করোনা সংকট মোকাবেলায় সরকার হতদরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য বিশেষ ওএমএস সুবিধা চালু করেছে। এর আওতায় ১০ টাকা কেজি দরে মাসিক ২০ কেজি চাল দেয়ার ব্যবস্থা করেছে সরকার। মূলত যাদের নাম সরকারের মাসিক সহায়তা বা সামাজিক নিরাপত্তা সহায়তার আওতায় নেই এমন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্যই এ সহায়তা কার্যক্রম।
খোলা বাজার (ওএমএস) খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর আওতায় ময়মনসিংহের নির্ধারিত ডিলাররা চাল বিক্রি করে আসছে। করোনা সংকটে দরিদ্র মানুষ যাতে স্বল্পমূল্যে চাল ক্রয় করতে পারে সে লক্ষে বিশেষ ওএমএস চালু করা হয়েছে। একই সাথে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদানের ঘোষনা দিয়েছে সরকার। এক্ষেত্রে সুবিধাভোগীদের তালিকা প্রনয়ণের দায়িত্ব পড়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপর।
জানা গেছে, ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ১৩ ইউনিয়ন ও সিটি করপোরেশন ৩৩ ওয়ার্ডে আগামী ১৬ মে থেকে প্রনীত তালিকা অনুযায়ী চাল,আটা বিক্রি করবে ওএমএস ডিলাররা। ইতিমধ্যে সিটি করপোরেশনের সবকটি ওয়ার্ড থেকে প্রদত্ত কার্ড প্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত তালিকায় কারাবন্দীর নাম ওঠানো, দ্বৈত নাম, এক ঘরের একাধিক নাম, হোল্ডিং নম্বর না থাকাসহ বিভিন্ন ত্রুটি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে একাধিক জনপ্রতিনিধির সাথে কথা বললে এ প্রতিবেদককে তারা জানান, প্রদত্ত তালিকাটি সংশোধনযোগ্য। মাঠ পর্যায়ে কাজ করলে ভুলত্রুটি হতে পারে। কেউ অভিযোগ বা কোন অসংগতির বিষয়ে তাদের স্ব স্ব জনপ্রতিনিধিকে জানালে তা ঠিক করে দেয়ার সুযোগ আছে। তবে তালিকায় থাকার মতো কোন ব্যাক্তি বাদ পড়লে অসন্তোষের কারণ নেই। সরকার একাধিক সহায়তা কার্যক্রম চালু রেখেছে, সহায়তা থেকে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কেউ বাদ পড়বেনা।