বিল্লাল হোসেন প্রান্তঃ
ময়মনসিংহ নগরীর আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী আলোকে আজও গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কালিঝুলি ইটাখোলা এলাকার চিহ্নিত অস্ত্র সন্ত্রাসী আলোর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, মাদক বাণিজ্য, অস্ত্র ব্যবসাসহ নানা অভিযোগে সাধারণ জনতা প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে। জনরোষে আলো এলাকা ছাড়লেও প্রতিবাদকারীদের হুমকি ধামকি অব্যাহত রয়েছে। নির্দিষ্ট চাঁদাবাজির ঘটনায় আলোর বিরুদ্ধে মামলা হলেও ১৪ দিনে গ্রেফতার হয়নি আলো। প্রশ্ন উঠেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আলোর লাগাম টানতে ব্যার্থ না উদাসহীন?
বহু মামলার আসামি আলো মিয়া সম্প্রতি গোহাইলকান্দি একাডেমী রোডের একটি বিকাশ ও মুদি দোকানে চাঁদার দাবিতে সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা চালায়। রেজাউল করিম নামের এক দোকনীকে ব্যাপক মারধর করে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় দোকানদার বাদী হয়ে ২৫ ডিসেম্বর আলোসহ সঙ্গীয় সন্ত্রাসীদের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। এদিকে মামলা তুলে নিয়ে আলোর অব্যাহত হুমকির মুখে চরম নিরাপত্তাহীনতায় পড়েন বাদী রেজাউল করিম। সন্ত্রাসী আলোর কর্মকান্ডে প্রতিবাদী হয়ে উঠেন এলাকাবাসী।
২৫ ডিসেম্বর থেকে লাগাতার বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ করে ৫ নং ওয়ার্ড এলাকাবাসী। সন্ত্রাসী আলোর গ্রেফতার দাবিতে রেঞ্জ ডিআইজি, জেলা পুলিশ সুপার, সিটি মেয়র, র্যাব-১৪, জেলা প্রশাসক, কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। পুলিশ প্রশাসন গত ১৪ দিনে আলোর তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করলেও তাদের গডফাদার আলোকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এ নিয়ে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুরুত্বহীনতার প্রশ্ন তুলে নানা মন্তব্য উঠেছে জনমনে।
নগরীর শীর্ষ সন্ত্রাসী আলোকে সবশেষ ২০১৮ সালের ১৩ মে অস্ত্র গুলিসহ গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। তবে জামিনে মুক্ত হয়ে আলো ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে কৌশলে চাঁদাবাজির রাম রাজত্ব কায়েম করে এলাকায় নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিলো। সাধারণ জনগণ আলোর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি। গুঞ্জন রয়েছে পাশ্ববর্তী এলাকার একজন প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি ও একজন আওয়ামী লীগ নেতার শ্যাল্টারে আলো অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। তবে এবার জনতা তাদের একত্রিত প্রতিরোধে আলোকে এলাকা ছাড়া করলেও রয়েছেন আতংকের মধ্যে। কারণ আলোর সন্ত্রাসী বাহিনী এখনও এলাকায় উপস্থিত থেকে গোপনে প্রতিবাদকারীদের হুমকি অব্যাহত রেখেছে।
এলাকাবাসী কোতোয়ালী থানার অভিজ্ঞ অফিসার ইনচার্জ ফিরোজ তালুকদার ও জেলা গোয়েন্দা সংস্থার দক্ষ অফিসার ইনচার্জ শাহ কামাল আকন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। জেলাব্যাপী এ দুই কর্মকর্তার চৌকস নেতৃত্বের সুনাম রয়েছে। তবে শীর্ষ সন্ত্রাসী আলোর গ্রেফতার সময়ে দাবি হলেও তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। এক্ষেত্রে চরম হতাশায় রয়েছে এলাকাবাসী।