বিল্লাল হোসেন প্রান্ত ॥
সেদিন বেশি দুরে নয় মিনিস্টার কোম্পানীর পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করবে। এটি আমার বিশ্বাস। কারণ কৃষি প্রধান দেশ বাংলাদেশ এখন শিল্পখাতে এগিয়ে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার শিল্পখাতে ব্যাপক উন্নয়ন তরান্বিত করতে সক্ষম হয়েছেন।
ময়মনসিংহের ত্রিশালের কাশিগঞ্জে মিনিস্টার হাইটেক পার্ক উদ্বোধনে এ কথা বলেন বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এমপি। তিনি ২৯ সেপ্টেম্বর শনিবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।
মন্ত্রী বলেন, দেশে সাড়ে সাত কোটি লোক ছিল, ছিল খাদ্যাভাব। আজ দেশে ১৬ কোটি মানুষ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ন। ৮১ সালে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতে দেশের পতাকা তুলে দিয়েছিলাম। আজ তার দুরদর্শী নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলছে উন্নয়নের পথে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ধর্মমন্ত্রী আলহাজ অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। এতে বিশিষ্ট নাট্যশিল্পী ও টকশো উপস্থাপক আরিফুল ইসলাম জয় এর উপস্থাপনায় বক্তব্য রাখেন মিনিস্টার মাইওয়ান গ্রুপ চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক খান (রাজ), ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলরুবা তনু।
বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, কারও যদি লক্ষ্য থাকে সে সেই লক্ষ্যে পৌছতে পারে। বঙ্গবন্ধু বার বার ফাঁসির মঞ্চ থেকে ফিরে বাংলার স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্য পূরণ করতে পেরেছিলেন। তিনি আমাদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র দিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু ক্ষুধা দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মানের দ্বিতীয় লক্ষ্যটি পূরণ করতে পারেন নি। ৭৫ এ ঘাতকের বুলেট জাতির জনককে হত্যার পর তার কন্যা আজ সে লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে চলছেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে ১২ শতাংশ দারিদ্রের হার। যা উত্তরণে শেখ হাসিনা ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে।
৭৫ এ জাতির জনককে হত্যার পর ময়মনসিংহের কারাগারে ধর্মমন্ত্রী আলহাজ অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের সাথে কাটানো সময়ের স্মৃতিচারণ করে বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, এ ময়মনসিংহে আমার অনেক স্মৃতি জড়িত রয়েছে।
তিনি বলেন, ময়মনসিংহের কারাগারে আমাকে এরশাদ শিকদারকে যে রুমে রাখা হয়েছিল সে রুমে (কনডেম সেলে) রাখা হয়। চরম নির্যাতনের মুখে সে সময়গুলো পার করেছি আমি ও ময়মনসিংহের বর্ষীয়ান নেতা ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। সে সময় আমার পরিবার জেলখানায় আমাকে দেখতে এলে মতি ভাইয়ে বাসায় থাকতো।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ময়মনসিংহের মাটি ও মানুষের নেতা ধর্মমন্ত্রী আলহাজ অধ্যক্ষ মতিউর রহমান কলেজ জীবনের সহপাঠি বাণ্যিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এর সাথে নিজের জীবনের স্মৃতিবিজড়িত দিনগুলো স্মরণ করেন।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমি এবং তোফায়েল ভাই একসাথে জেল খেটেছি। নির্যাতনের শিকার হয়েছি তৎকালিন স্বৈরশাসকদের হাতে। তবুও আজ অবধি আদর্শ থেকে এক চুলও সরে আসি নি।
তিনি বলেন, ময়মনসিংহে মিনিস্টার কোম্পানীর হাইটেক পার্ক গড়ে উঠেছে এটি আমাদের গর্ব। আমি আশা করি এ কোম্পানী দেশে বিদেশে আমাদের সম্মাণকে আরও বৃদ্ধি করবে।
কোম্পানীর চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক খান রাজ বলেন, আমি মনে করি এই ত্রিশাল থেকে মিনিস্টার পণ্য দেশে বিদেশে পৌছে দিতে পারবো। ২০০২ সালে সাদা কালো টেলিভিশন দিয়ে মিনিস্টারের যাত্র শুরু হয়। আজ এটি দেশের একহাজার শোরুমে কালার টিভি, রেফ্রিজেরেটরসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানের পণ্য সরবরাহ করছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা শিল্পখাতে শুল্ক অবমুক্ত করাসহ বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করায় আমরা এতদুর এগিয়ে আসতে পেরেছি। আমরা দেশের মানুষের চাহিদা পূরণ করে এগিয়ে যেতে চাই অবিরত।
কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলরুবা তনু স্বাগত বক্তব্যে বলেন, মিনিস্টার কোম্পানীর সেবা দেশের মানুষের জন্য অবারিত রাখতে চাই। এই অবিরাম পথচলা ডিজিটাল বাংলাদেশের অংশ হয়ে থাকবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল এমপি, বিভাগীয় কমিশনার মাহমুদ হাসান, রেঞ্জ ডিআইজি নিবাস চন্দ্র মাঝি, ডা. এইচ বি এম ইকবাল চেয়ারম্যান প্রিমিয়ার ব্যাংক লি:, ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, জেলা পুলিশ সুপার মো: শাহ আবিদ হোসেন, সদস্য শুল্ক ভ্যাট নীতি রাজস্ব বোর্ড খন্দাকার মুহাম্মদ আমিনুর রহমান, ত্রিশালের সাবেক এমপি আলহাজ রুহুল আমিন মাদানী, ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল জাকির।
অনুষ্ঠান শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন , শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একমিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানে লাইট এন্ড সাউন্ড শো, কোম্পানীর প্রামাণ্যচিত্র পরিবেশন ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। আমার পণ্য আমার দেশ, গড়বো বাংলাদেশ এই শ্লোগানকে সামনে নিয়ে মিনিস্টার মাইওয়ান গ্রুপ এর উদ্বোধনী ও কনফারেন্স অনুষ্ঠানটি ছিল জমকালো।