জনমত ডেক্স ॥
আনন্দ আর আনন্দ। আবার চ্যাম্পিয়ান। আবার ময়মনসিংহ। এবার নিয়ে হ্যাট্রিক চ্যাম্পিয়নশিপ। এক অনন্য রেকর্ড। ফুটবল কাব্যে সাফল্য গাঁথা। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম থেকে শুক্রবাসরীয় সুসংবাদ। জয়ের ঐহিহ্যে অপ্রতিদ্বন্দ্বী ফুটবল কন্যারা। এ আনন্দধারায় সাক্ষী থাকলেন ধর্মমন্ত্রী আলহাজ অধ্যক্ষ মতিউর রহমান।
জেএফএ কাপ অনুর্ধ্ব ১৪ জাতীয় মহিলা ফুটবলের শিরোপা এবারও কলসিন্দুর কন্যা খ্যাত ময়মনসিংহের মেয়েদের। এবার ধোবাউড়ার সাথে নান্দাইলের মেয়েরাও রয়েছে এই কৃতিত্বের ভাগীদার।
৩-০ গোলে ফাইনাল ম্যাচে অর্জিত চ্যাম্পিয়ান ট্রফিটা উৎসর্গ হলো সাবিনার স্মৃতির প্রতি। ফুটবল বিস্ময় কলসিন্দুরের মেয়ের এই দিনে সাবিনাকে স্মরণ করেছে তার উত্তসূরী সতীর্থরা। ফাইনালে ঠাকুরগাঁয়ের রাঙাটুঙ্গির মেয়েরা রানার্স আপ হয়েছে।
ময়মনসিংহ ভাল করবে এটা যেন জানাই ছিল। তাই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে মেয়েদের উৎসাহ দিতে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহের মাটি ও মানুষের নেতা ধর্মমন্ত্রী আলহাজ অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। চ্যাম্পিয়ানদের সাফল্যে উচ্ছ্বাসিত হয়েছেন। ছবি তুলেছেন।
ফুটবলে ময়মনসিংহের বিজয় গর্বে উদ্বেলিত, উচ্ছ্বাসিত ফুটবল কন্যাদের অভিনন্দন জানাতে স্টেডিয়ামে হাজির ছিলেন মোহিত উর রহমান শান্ত। বিসিবির সদস্য, ক্রীড়া সংগঠক, ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তিনি। ময়মনসিংহের সাফল্যখচিত আনন্দদিনে এই ক্রীড়া সংগঠক ছিলেন তাদের সাথে।
উপস্থিত ছিলেন গফরগাঁয়ের এমপি ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক, কোচ সালাউদ্দিন সহ অনেকেই।
চ্যাম্পিয়ান দলের অধিনায়ক ইয়াসমিন গর্বিত। তিনি বলেছেন-‘ সাবিনার জন্যই ফাইনালটা জিততে চাই।’ সাবিনার জন্যই জিতেছেন তারা। লক্ষ্য অর্জনে অব্যর্থ তারা। শুরু হলো নতুন অধ্যায়।
অনৃর্ধ্ব ১৫ দলের ক্যাম্পে থাকা ময়মনসিংহের ফুটবলার সানজিদা, মর্জিয়া, তহুরা, তাসলিমারা গ্যালারিতে বসে খেলা দেখেছেন। দেখেছেন সাফল্যের ধারাবাহিকতা। দেখেছেন সর্বচ্চো গোলদাতা রোজিনার কারিশ্মা। এবার সময় রোজিনাদের। রোজিনা ম্যাচে সর্বোচ্চ ১৪ টি গোল করেছেন। আর সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন শামসুন্নাহার। সেরা স্ট্রাইকার সালমা। এরা ময়মনসিংহের কিশোরী। আলোচনায় রোজিনা। চূড়ান্ত পর্বের মাত্র ৩ ম্যাচে খেলেছেন ১৪ টি গোল করে জিতেছেন সর্বোচ্চ গোলকরার ট্রফি। জেএসসি পরীক্ষার জন্য গ্রুপ পর্ব ও সেমিফাইনাল খেলা হয়নি।
গত ২ বছরে বঙ্গমাতা স্কুল ফুটবলে কলসিন্দুরের হয়ে সেরা খেলোয়াড় ও সর্বেচ্চ গোলদাতা হয় রোজিনা। তার বাবা ঢাকায় পিকআপ চালান। মেয়ের খেলা দেখোর সুযোগ তার হয়নি। ট্রফি জিতে রোজিনারও মন খারাপ হলো বাবার জন্য। ঢাকায় থেকেও খেলা দেখতে পারলেন না।
কিশোরীদের ফুটবলে হ্যাটটিক চ্যাম্পিয়ান ময়মনসিংহ। জাতীয় এবং বিশ্ব ফুটবলেও উজ্বল সাফল্য। ফুটবলের এই মেধাবী প্রজন্ম আলোকিত করেছে সীমান্তবর্তী ধোবাউড়া উপজেলার নেতাই নদের উপকণ্ঠের গ্রাম কলসিন্দুরকে। কলসিন্দুর এখন বিখ্যাত। দেশের মহিলা ফুটবলের সাফল্য এই গ্রামের আনন্দ অবদান। দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও এই কিশোরীরা দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সাফল্যের গৌরব বয়ে এনেছেন।
বয়স ভিত্তিক দলের এই মেধাবীরা একদিন জাতীয় দলে খেলবে। মহিলা ফুটবলের ভবিষ্যৎ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ানরা কৈশোরেই বিপ্লব ঘটিয়েছে।
কলসিন্দুরের ১৫ আর নান্দাইলের ৩ ফুটবলার এর দুর্দান্ত পারফমেন্স ময়মনসিংহের ক্রীড়াঙ্গনে আনন্দধারা বইয়ে দিয়েছে। অভিনন্দন-ফুটবল কন্যাদের।
আশিক চৌধুরী॥