বিল্লাল হোসেন প্রান্তঃ
জমি জটিলতায় ময়মনসিংহের আকুয়ায় এলাকাবাসীর উদ্দ্যেগে স্থাপিত ডাঃ মুশফিকুর রহমান শুভ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ২৬০ শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক কর্মচারীদের ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। রবিবার ৯ নভেম্বর সকালে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে স্কুলটি গুরিয়ে দেয় ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন। জমির দখল নিয়ে সেখানে মসিকের মালিকানার সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, মসিকের সহকারী সচিব আমিনুল ইসলাম, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আঃ হালিম, সম্পত্তি কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান, মসিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব উল আহসান ও পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে এ উচ্ছেদ অভিযান চালান।
মসিকের সম্পত্তি কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, মসিকের দুই একর ৫৬ শতাংশ জমিতে সাবেক ধর্মমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের প্রয়াত ছেলে ডাঃ মুশফিকুর রহমান শুভর নামে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।
জমি সংক্রান্ত জটিলতায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক আদালতে মামলা করেন। ১ নভেম্বর ময়মনসিংহের একটি আদালত রায় দেয় সিটি করপোরেশনের পক্ষে। আদালতের রায় পেয়েই পুলিশ ও মসিক ম্যাজিস্ট্রেট স্কুলটি গুড়িয়ে দেয়।
তবে সচেতন মহলে আলোচনা চলছে যেহেতু স্থাপনাটি মসিকের জমিতে হয়েছে এটি ধ্বংস না করে নিজেদের আওতায় রাখা যেত। সিটি করপোরেশন রায় পাওয়ার পর কিছু সময় নিতে পারতো, এবং শিক্ষার্থীদের অন্যত্র ব্যবস্থা করার পরও উচ্ছেদ করা যেত। স্কুলটিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা এ অবস্থায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়বে পড়াশোনা নিয়ে বিশেষজ্ঞ মহলের অভিমত।
বর্তমান সরকার নারীশিক্ষা ও নারী অগ্রগতি তরান্বিত করতে বিশেষ গুরুত্বারোপ করছে। নারী শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সরকার অবৈতনিক করে একাদশ শ্রেনী পর্যন্ত। উচ্ছেদকৃত স্কুলের শিক্ষার্থী অভিভাবকরা হতাশাব্যাক্ত করে বলেন, হঠাৎ এ উচ্ছেদে আমাদের সন্তানদের পড়াশোনা হুমকির মুখে ফেলেছে। তারা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকার্যক্রম অব্যাহত রাখতে স্থানীয় শিক্ষা প্রশাসন ও সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
স্কুলটির সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহাদাত হোসেন জানান, কোন পূর্ব নোটিশ ছাড়াই সিটি করপোরেশন স্কুলটি ভেঙ্গে দিয়েছে। আমরা আদালতের য়ার সম্পর্কিত কোন নোটিশও পাইনি। প্রথম থেকে নবম শ্রেনী পর্যন্ত ২৬০ জন শিক্ষার্থী স্কুলটিতে অধ্যায়নরত। এ স্কুলের শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যে তাদের মেধার স্বাক্ষর রেখেছে ময়মনসিংহের শিক্ষাঙ্গনে।
তিনি বলেন, স্কুলটির স্থানে এক সময় ময়লা আবর্জন ফেলা হতো। দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী যায়গাটিতে একটি স্কুল করার জন্য উদ্দ্যেগী হয়। এবং পৌরসভার সাথে আলোচনা স্বাপেক্ষে স্কুলটি নির্মাণ করে এলাকাবাসী। শতভাগ পাশের রেকর্ড করা স্কুলটি ধ্বংস না করে সরকারী আওতাধীন করা যেত। এক্ষেত্রে স্কুলটি উচ্ছেদে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণ হিসাবে সাবেক ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের প্রয়াত পুত্রের নামে স্কুলটির নামকরণ হওয়াকে বড় করে দেখছেন স্থানীয়রা।